সাকিব আল হাসান বাংলাদেশের আরও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ​ দেখছেন দেখছেন

‘আমরাই পাকিস্তানের বিপক্ষে ফেবারিট ।’ ভারতে যাওয়ার আগে এমন সাহসী উচ্চারণ করে গিয়েছিলেন। পাকিস্তানকে ১৬ বছর ধরে কোনো ধরনের ক্রিকেটে বাংলাদেশ হারাতে পারেনি-এই তথ্য সাকিবের অজানা নয়। আবেগে ভেসে যাওয়ার মানুষও তিনি নন। ‘নতুন বাংলাদেশ’ সাকিবকে আসলে আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে । বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে  অবাক বিস্ময়ে দেখেছে সবাই।

শুধু বর্তমান নয়, সাকিব ​  ভবিষ্যৎ নিয়েও আশাবাদী। বিশ্বকাপের মঞ্চে সৌম্য-সাব্বির-তাসকিনের মতো নতুনেরা আলো ছড়িয়েছেন। আরও একগাদা তরুণ প্রতিভা উঠে আসছে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য আরও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ​ অপেক্ষা করছে।উইজডেন ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক দীর্ঘ সাক্ষাৎ​কারে এই আশাবাদের কথা জানিয়েছেন ।

সাকিব বলেছেন, ‘একটা প্রক্রিয়া তো চলমান। অনেক দিন ধরেই আমরা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলছি। বয়সভিত্তিক দলগুলোর কাঠামোও শক্তিশালী করা হয়েছে। এখন আমরা তাই আগের চেয়ে অনেক ভালো মানের খেলোয়াড় পাচ্ছি। অনেক বেশি খেলোয়াড় থেকে দল বেছে নেওয়ার সুযোগ হচ্ছে। নতুনরাও দলে আসার পর ভালো খেলছে। সৌম্য-তাসকিনদের  বিশ্বকাপে আপনারাদেখেছেন। দলে আসার পর দ্রুত তাদের ভালো খেলাটা আমাদের জন্য ইতিবাচক ইঙ্গিত।’

এর পরই আশার গান সাকিবের কণ্ঠে, ‘বিশ্বকাপে যেমন খেলেছি, তরুণেরাও যদি ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলে যায়, এ ধরনের খেলা আমরা নিয়মিতই খেলতে পারব। ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে উঠে আসা খেলোয়াড়েরাও আগের চেয়ে ভালো মানের খেলে। রনি তালুকদারকে যেমন পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে রাখা হলো। লিটন দাসও ভালো ব্যাটসম্যান। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, এখন দলে জায়গা পাওয়ার জন্য ইতিবাচক প্রতিযোগিতা হচ্ছে। এটা আমাদের আরও উন্নতি করতে সাহায্য করবে।’

কিন্তু বিশ্বমঞ্চে উন্নতি করাটা বাংলাদেশের একার ওপর নির্ভর করছে না। বড় দলগুলোর বিপক্ষে খেলার সুযোগ মেলে কালেভদ্রে। সেসব দেশে সফরের সুযোগ তো আরও বিরল। সাকিব আরও বললেন, ‘অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ডের মতো দেশগুলোতে সফর​ না করলে সেরা পর্যায়ে খেলার জন্য আমরা কখনোই তৈরি হব না। অবশ্য পরিস্থিতি এখন অনেকতাই বদলাচ্ছে। কদিন পর পাকিস্তান আসছে বাংলাদেশে, এরপর ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়াও আসবে। এই মুহূর্তে বড়দলগুলোর বিপক্ষে আমাদের ঠাসা সূচি। আশা রাখি বড় দলগুলো অন্তত নিয়মিতই সফরে আসবে। কিন্তু এই দেশগুলোতে আমরা সফর না করলে বুঝতে পারব না আসলেই আমরা কতটা ভালো বা খারাপ।’

সাকিব যোগ করলেন, ‘এবার যেমন বিশ্বকাপে আমাদের দলের বেশির ভাগই আগে কখনো অস্ট্রেলিয়ায় খেলেনি। আমরা তাই রোমাঞ্চিত ছিলাম। সেখানে ভালো খেলায় দেশেও একটা অনেক পরিবর্তন এসেছে। সবার মধ্যে এখন অনেক আত্মবিশ্বাস। এখন আরও বেশি সফর করলে সেটা আমাদের উন্নতিতে অনেক সাহায্য করবে।’

তবে কেউ এসে মুখে খাবার তুলে দেবে না। আসল কাজটা নিজেদেরই করতে হবে। ক্রিকেটে আরও সোনালি সুদিন আনার দাওয়াইও বাতলে দিলেন, “প্রথমত বাংলাদেশে সবকিছু ঢাকাকেন্দ্রিক। চট্টগ্রাম-খুলনার মতো বড় বিভাগগুলোতে আরও বেশি অবকাঠামো তৈরি করলে আরও বেশি খেলোয়াড় উঠে আসবে। দ্বিতীয়ত ‘এ’ দলটাকে আরও বেশি সফরের মধ্যে রাখতে হবে। এই দলের খেলোয়াড়েরাই তো কদিন বাদে জাতীয় দলে খেলবে। তাদের আরও বেশি খেলার সুযোগ দরকার। ভারত, শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ডসহ সব বড় দেশে সফর করা উচিত।’

Related posts

Leave a Comment